অনেক কিছুই তো বলা যায়, করা যায়। লোকদের মাতিয়ে রাখা যায় নানান বাক্যমালার কল্পনাবিলাসে। লোকেরাই মেতে থাকতে চায়, নেশাগ্রস্থের মতো এদিক- ওদিক ছুটে বেড়ায়।
তারা যেখানেই নেশার খোরাক পায় সেখানেই ভিড় জমায়। আর যারা মাতিয়ে রাখে তাদের কদর করতে করতে যখন নিজের দিকে তাকায়, তখন নিজেরও কিছু একটা করার ইচ্ছে জাগে, কিন্তু বেশিরভাগই সুযোগ পায়না, যে কারণে বিষন্নতায় ডুবে থাকা লোকদের সংখ্যাই বেশী। এই বিষন্নতার কারণও ঐ কল্পনাবিলাস।
‘এই লোকটার এতো অনুসারী! কতো বিত্তবৈভব! সে যে কতো সুখে আছে। আহ! আমিও যদি তার জায়গায় থাকতাম।’ ‘আমিও যদি ওমুকের মতো সুশ্রী হতে পারতাম!’
আসলে পূজারী ও পূজিত উভয়েই এক অশান্ত আত্মার ধারক।
যোগ্যতা অর্জন - সেটাকে কাজে লাগিয়ে কিছু একটা করা – কিছু একটা হয়ে গেলে সেটাতে তুষ্টি খোঁজা – রাতের সন্তুষ্টি ভোরের আলোর বিচ্ছুরণে অন্ধকারের সাথে বিদায় নেয় – আবার এক অস্থির অন্তর নিয়ে সকাল হয় – আত্মতুষ্টি বেশিদিন স্থায়ী হয়না – হৃদয় আর প্রশান্ত হয়না – অনেকে অভিনয় করে যদিও বাস্তবে সে বিপর্যস্ত।
নেই, কি যেন নেই!
পূজারী ও পূজিত কতইনা দূর্বল!
সবাই তারকা হতে চায়। মনে করে ওই আসনে বসলেই বোধহয় পরম শান্তি মিলবে।
কিন্তু,
মরিচীকার অনুসরণ করে তো পানি পাওয়া যায়না।
জীবন সবসময় একরকম যায়না, সবার জীবনের গতিপথ সমান হয়না। পূর্ববর্তী ও সমসাময়িক তারকাদের আত্মহননের সংবাদ প্রত্যক্ষ করেও কি এসব নেশাগ্রস্থ লোকদের বোধোদয় হয়না?
এই তারকারা নিজেরাই বিষন্নতার উৎস, সাময়িক কলাকৌশল করে নিজেরাও কিছুটা স্বস্তি পেতে চায়, কিন্তু সকাল হলেই ঘোর কেটে যায়। তারপর আবার নেশার খোরাক বানায়। ছড়িয়ে দেয় তার আসক্ত অনুসারীদের মাঝে। এভাবেই কারো আলো নিঃশেষ হয়ে আসে, আবার অনেক তারকা বিষন্নতার বোঝা নিয়ে টুটে যায়। শেষ জীবনে উভয়েই স্মৃতি নিয়ে আরেক বিষন্নতায় ভোগে। এখন তারা পুরোনো হয়ে গেছে, নতুন মাতালেরা তাদের জায়গা দখল করে নিয়েছে। পুরোনোদের ভুলে যাওয়াই স্বাভাবিক, মানব মস্তিষ্ক তো এতো এতো তারকাদের গুণতে সক্ষম নয়। নতুন জ্বলজ্বলে তারকাদের নিয়েই নতুন অনুসারীরা ব্যস্ত। পুরোনোরা যারা এতোকাল ধাক্কা খায়নি, তারা এবার দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে! চোখের পলকেই জীবনটা কেটে গেলো!
আমি চশমা বদলে ফেলেছি। ওসব আমার কাছে এখন অনর্থক ঠেকে।